২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে পণ্য এবং পরিষেবা কর বা জিএসটি চালু হয়েছে। তারপর থেকে ব্যাঙ্ক লোনের ক্ষেত্রে কর্পোরেট এবং ব্যক্তিগত গ্যারান্টির ওপর ট্যাক্সের মতো বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। শনিবার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে এরকম কয়েকটি ট্যাক্স সংক্রান্ত অস্পষ্ট বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আখ থেকে তৈরি গুড়ে জিএসটির হার ২৮% থেকে কমিয়ে ৫% করা হবে। মূলত গবাদি পশুর খাবারের খরচ কমাতে এবং চিনির কারখানাগুলোতে যাতে নগদ টাকা সরবরাহে বিঘ্ন না হয়, তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে কৃষকরাও আরও দ্রুত নিজেদের বকেয়া পাবেন। রেট সংক্রান্ত পরিবর্তন এবং অস্পষ্টতার ব্যাখ্যা করা ছাড়াও আর একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে অ্যালকোহলিক লিকারের জন্য ব্যবহার করা এক্সট্রা নিউট্রাল অ্যালকোহল (ইএনএ)-এর ওপর জিএসটি কাউন্সিল ট্যাক্স আরোপ করবে না। প্রসঙ্গত, মানুষের পান করার মদ এখনও জিএসটি আওতার বাইরে রয়েছে। এটি তৈরির একটি অন্যতম মূল উপাদান ইএনএ বা হাই স্ট্রেংথ পোটেবল অ্যালকোহলের ওপর ইন্ডিরেক্ট ট্যাক্স আরোপ করা হয়নি। এটির ফাইনাল প্রোডাক্টের ওপর রাজ্যগুলো এমনিতেই লেভি প্রয়োগ করে। এই জটিল বিষয়টি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রি বহু দিন ধরেই ব্যাখ্যার প্রত্যাশা করছিল। আদালত বিভিন্ন সময় এই ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছে।
তবে এটা দেখে বেশ ভালো লাগছে যে ২০২২ সালে জিএসটি কাউন্সিল মাত্র দুবার বৈঠক করলেও এই বছর তারা চার বার বৈঠক করে ফেলেছে, যার মধ্যে মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনটি বৈঠকের নজিরও রয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলিতে কয়েকটি অ্যাজেন্ডা আইটেম অসামঞ্জস্যগুলো ঠিক করার সাথে সম্পর্কিত। বহু প্রতীক্ষিত জিএসটি অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট এবং সদস্যদের বয়স সংক্রান্ত নিয়মাবলী অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, এটি শীঘ্রই চালু হবে। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ব্যবহার করা শব্দবন্ধ, ‘প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পরিকল্পনা’ এবং এটির বদলে কোন ধরনের সারচার্জ ব্যবহার করা হবে, শুধুমাত্র এই বিষয় নিয়ে আগামীতে কোনো এক দিন কাউন্সিলের বৈঠক গ্রাহক এবং উৎপাদনকারীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আদতে জিএসটির প্রথম পাঁচ বছরে রোজগার হ্রাসের জন্য রাজ্যগুলোকে এক প্রকার ক্ষতিপূরণ দিতে ‘গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স’ ছাড়াও একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ভর লেভি হিসাবে এটি প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ট্যাক্স সংগ্রহ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় এয়ারেটেড ড্রিংক, টোবাকো প্রোডাক্ট এবং অটোমোবাইলের মতো তথাকথিত ডিমেরিট পণ্যের ওপর আরোপ করা সেস ২০২৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। খারাপ কিছু জিনিসপত্রে নিরুৎসাহ দেওয়া কাম্য হতে পারে। তবে পৃথকভাবে কোনো নতুন সেস চাপানো উচিত হবে না। বরং জিএসটির জটিল মাল্টিপল-রেট কাঠামোকে বৃহত্তর অর্থে আরও ভালোভাবে কার্যকর করার অংশ হিসাবে এটি সম্পন্ন করা যেতে পারে। কার্যকর করার প্রক্রিয়া দুই বছর আগে শুরুও হয়েছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে রোজগারের ছবিটা তুলনামূলকভাবে মজবুত হওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা থমকে গিয়েছে। মাঝে মধ্যে পরিবর্তনের মতো অস্বস্তিদায়ক বিষয়ের পাশাপাশি সম্পূর্ণ জিএসটি কাঠামোর সংস্কার প্রয়োজন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম এবং মদের মতো জিএসটি তালিকার বাইরে থাকা জিনিসগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
COMMents
SHARE