নিউজক্লিকের বিরুদ্ধে মামলা ধোপে টেকার নয়

এই মামলায় একটা উদ্বেগজনক ট্রেন্ডও নজরে পড়েছ: বর্তমানের শাসকরা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনের অপপ্রয়োগ করে এবং দেশের সুরক্ষার আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের অধিকার খর্ব করছেে

October 09, 2023 09:46 am | Updated 09:46 am IST

নিউজক্লিকের প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর পুরকায়স্থ সহ অন্যদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। তবে এফআইআর এতটাই অস্পষ্ট এবং দুর্বল যে, তাতে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তো দূরের কথা, অভিযুক্তরা কী অপরাধ করেছে, সেটাই ঠিকঠাক বলা হয়নি। নিউজক্লিকের কোন খবর বা কনটেন্ট নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, এখনও পর্যন্ত তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে এফআইআরে অনেক গুরুতর অভিযোগের গল্প বলা হয়েছে, যেমন দেশের নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি করার জন্য ষড়যন্ত্র, ২০১৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে সমস্যা তৈরি করা, সরকারের বদনাম করা, অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবায় বাধা তৈরি করা ইত্যাদি। ‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট (ইউএপিএ) এবং ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতার সম্পর্ক তৈরি করা সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারা প্রয়োগের কথা এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এফআইআরের কোথাও এমন কোনো কাজকর্মের কথা বলা হয়নি, যাকে বেআইনি বা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলা যেতে পারে। একটি সাধারণ বর্ণনা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, ভারত বিরোধী শক্তির মাধ্যমে বেআইনিভাবে বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানো হয়েছে, যার উদ্দেশ্য সরকারের বদনাম করা, দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভারতের ভৌগলিক অখণ্ডতায় আঘাত করা এবং দেশের ঐক্য ও নিরাপত্তায় ঝুঁকি সৃষ্টি করা। ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য অরুণাচলপ্রদেশ এবং কাশ্মীর ভারতের অংশ নয় বলে দাবি করা ইমেইল আদান-প্রদান এবং অত্যাবশ্যক পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ প্রমাণ করতে ২০২০-২১-এ হওয়া কৃষকদের বিক্ষোভে সুরক্ষা প্রদান করতে গ্রহণ করা পদক্ষেপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এটা বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে অপপ্রচার, বেআইনি কার্যকলাপ চালাতে এবং দেশের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটনানোর জন্য চীন থেকে পাঠানো অর্থ ব্যবহার করার মামলাটির ভিত তৈরি করতে পুলিশ জার্নালিস্টিক কনটেন্ট সহ নিউজক্লিকে আমেরিকান ব্যবসায়ী নেভাইল রয় সিংহামের পেমেন্টকে হাতিয়ার করতে চাইছে। ইউএপিএ আইনটিকেও খুব সহজে অপব্যবহার করা যায়। আইনটিতে যে সমস্ত শব্দবন্ধের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা লোকজনের কাজকর্মের ক্ষেত্রে ‘অপরাধমূলক চিন্তাভাবনার’ জন্যও লোকজনকে শাস্তি দিতে প্রয়োগ করা যায়। ইউএপিএ ব্যবহার করার পিছনে আর একটা কৌশল হলো, এই আইনের ধারা প্রয়োগ করে বিক্ষুব্ধদেরকে অনেক বেশি সময় ধরে জেলে বন্দি করে রাখা যাবে এবং সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা। এর পাশাপাশি, আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে ‘চীনা ষড়যন্ত্রের’ তত্ত্ব সামনে এনে শাসকদল বিজেপি নিজেদের পালে হাওয়া টানতে চাইছে। এই ব্যাপারে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হলো, দুটি টেলিকম কোম্পানির বিরুদ্ধে ওঠা ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করার অভিযোগে শুধুমাত্র একটা অন্য এফআইআরে এটির উল্লেখ করা এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অর্থ সরবরাহের জন্য এই উপায়গুলো কতটা সাহায্য করে, সে বিষয়ে পৃথক তদন্তের প্রয়োজন আছে কি না, তা ভাবতে হবে। এই কোম্পানিগুলোর আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য লিগ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে যারা সাহায্য করেছিলেন, তাদের মধ্যে একজন আইনজীবীও ছিলেন, এটা উল্লেখ করে পুলিশ সম্ভবত আইনি পরিষেবাকেই অপরাধের সমতুল করার কথা ভাবছে। এই মামলায় একটা উদ্বেগজনক ট্রেন্ডও নজরে পড়েছে, আর সেটা হলো বর্তমানের শাসকরা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইনের অপপ্রয়োগ করে এবং জাতীয় সুরক্ষার আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের অধিকার খর্ব করছে।

Top News Today

Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.