ক্রিকেটের সব থেকে বড় মঞ্চ আইসিসি বিশ্বকাপ। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে জাঁকজমকভাবে টুর্নামেন্টটির উদ্বোধন হতে চলেছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবং ২০১৯ সালের রানার আপ নিউজিল্যান্ড এই প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ভেন্যুতে ১৩তম বিশ্বকাপের বিভিন্ন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সব শেষে, ১৯ নভেম্বর ফের এই আহমেদাবাদেই অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল। ভারতীয় ক্রিকেট পরিকাঠামোতে বড় ম্যাচ আয়োজন করার জন্য মুম্বই এবং কলকাতার নাম বহু আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তবুও এখন ভারতীয় ক্রিকেটের নয়া সমীকরণে আহমেদাবাদের গুরুত্ব এই দুটি শহরকে ছাপিয়ে গিয়েছে। বাণিজ্যিক আধিপত্য এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার ছাপ তাতে স্পষ্ট। এর আগে ১৯৮৭, ১৯৯৬ এবং ২০১১ সালে ভারতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ তাতে সহ-আয়োজক হিসাবে ভূমিকা পালন করেছে। তবে এবারের সংস্করণের ছবিটা আলাদা। এবারের বিশ্বকাপ ভারত একাই আয়োজন করছে। চেন্নাই এবং ধর্মশালার মতো স্টেডিয়ামেও বিশ্বকাপের স্বাদ পাওয়া যাবে। ক্রিকেটের চিরাচরিত ফরম্যাট হিসাবে পরিচিত টেস্ট এবং বিশ্বজুড়ে প্রবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা টি-২০ লিগের মাঝে এখন ওডিআই ঘিরে উন্মাদনা কিছুটা হলেও হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রতি চার বছর অন্তর একবার করে বিশ্বকাপের সৌজন্যে ওডিআই ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হয়। এটি খেলায় কিছুটা প্রাসঙ্গিকতা এবং মজবুত ভিত্তি প্রদান করে। সর্বশেষ সংস্করণটিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় এবং ২০১৯ সালে লর্ডসের ময়দান যে ক্লাইম্যাক্সের সাক্ষী হয়েছিল, তেমনই ছবি এবারও দেখা যেতে পারে, যা ওডিআইয়ের গৌরব অক্ষুণ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।
১৯৭৫ সাল থেকে বিশ্বকাপের রথের চাকা গড়াতে শুরু করে। তারপর থেকে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণাও ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। এরকম একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল যে আয়োজক দেশ বিশ্বকাপ জিততে পারে না। তবে ২০১১ সালের এপ্রিলের সেই মায়াবী রাতে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এম.এস ধোনির হাঁকানো বিশাল ছক্কার পর এই ভ্রান্ত ধারণাটি ভেঙে যায়। তারপর ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের আয়োজন করে একই ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে, আয়োজকরা যে শেষ হাসি হাসতে পারবে না, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। রোহিত শর্মার দলকে এই ট্রেন্ডের পুনরাবৃত্তি করে দেখাতে হবে। জসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পাণ্ডিয়া, কে.এল রাহুল এবং শ্রেয়স আইয়ার চোট সারিয়ে ফিরেছেন, যা নিঃসন্দেহে দলকে আরও মজবুত করে তুলেছে। তবে সাপোর্ট স্টাফদেরকে সামগ্রিকভাবে খেলোয়াড়দের ফিটনেসের ওপর কড়া নজর রাখতে হবে। রোহিত শর্মা, শুভমান গিল এবং বিরাট কোহলির দৌলতে ভারতের ব্যাটিং শক্তি বিপক্ষের টিমকে ধরাশায়ী করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এর পাশাপাশি বুমরাহ এবং মহম্মদ সিরাজ ও মহম্মদ শামির বোলিং অ্যাটাক প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কড়া পরীক্ষার মুখে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। কুলদীপ যাদব সহ আর. অশ্বীনের প্রত্যাবর্তন স্পিন বিভাগকেও মজবুত করে তুলেছে। তবে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তান চমকপ্রদ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে আয়োজকদের বিশ্বকাপ জয়ের আশায় জল ঢালতে পারে।
COMMents
SHARE