বর্ষার ছবি

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জলবায়ু সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার মোকাবিলায় ভারতের মজবুত কাঠামো প্রয়োজন

October 03, 2023 11:02 am | Updated 11:02 am IST

২০১৮ সালের পর এই প্রথমবার ভারতে বর্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতে ৮২ সিএম বৃষ্টি হয়েছে, যা প্রায় ৬% কম। তার কারণ ৮৯ সিএমকে স্বাভাবিক পরিমাণ বৃষ্টি বলে বিবেচনা করা হয়। এপ্রিল মাসেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে এল নিনোর প্রভাবের ফলে এবারের বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত নাও হতে পারে। মধ্য এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এই পর্যায়ক্রমিক উষ্ণায়নের জেরে ভারতে, বিশেষত উত্তর-পশ্চিম অংশে বৃষ্টিপাতে ঘাটতি দেখা যায়। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে বর্ষার ওপর কুলিং লা নিনা নামে এক বিপরীত প্রভাব দেখা যায়। এই প্রভাবের ক্ষেত্রে অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এই সমস্ত হিসাবের কথা মাথায় রেখে, ২০২৩ সালের বর্ষায় যে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে, এমন একটা আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে এই বছরের বর্ষায় অভিজ্ঞতা মোটেও সাধারণ বা স্বাভাবিক ছিল না। দেশের ৯% এলাকায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে ১৮% এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। দেশের বাকি অংশে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট মাস হলো বর্ষার দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে এবারে স্বাভাবিকের চেয়ে তৃতীয় নিম্ন বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার উত্তর ভারতের যে সমস্ত রাজ্যগুলোতে বৃষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, সেখানে পরে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেমন জুলাইয়ে চন্ডীগড়, হরিয়ানা এবং হিমাচলপ্রদেশে অত্যাধিক বৃষ্টি হয়। এর ফলে এই রাজ্যগুলোতে ব্যাপক বন্যা সহ ভূমিধ্বসের মতো ঘটনাও ঘটে। অনেক শহরে বন্যা পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে পড়ে যে স্বাভাবিক অবস্থা তৈরি হতে বেশ কয়েক দিন লেগে যায়। আগস্ট মাসে হিমাচলপ্রদেশ থেকে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির খবরও পাওয়া গিয়েছে। এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে তথাকথিত পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে, যেগুলো হলো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তৈরি হওয়া নিরক্ষীয় ঝড় এবং এগুলো সাধারণত বর্ষায় বড় ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করা হয় না। তাই এগুলো নৃতাত্ত্বিক উষ্ণায়নের বিস্তৃত প্রভাবের ফিঙ্গারপ্রিন্ট।

এর বিপরীতে মহারাষ্ট্রে খরা বা বৃষ্টিহীনতার মতো ছবি দেখা গিয়েছে। এমনকি ছত্তীসগঢ়, বিহার এবং কর্ণাটক থেকে জল সঙ্কটের খবরও পাওয়া গিয়েছে। কাবেরী নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ুর সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে কর্ণাটক। ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট তাদের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত, উত্তর-পূর্ব বর্ষার প্রভাবে উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে স্বাভাবিক বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ ভারতের একাধিক এলাকায় অত্যাধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। বৃষ্টি বা আবহাওয়ার ক্ষেত্রে যে এরকম খামখেয়ালী দেখা যাচ্ছে, সেটা থেকে ফের একবার জলবায়ু সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার মোকাবিলায় মজবুত কাঠামো তৈরি বা ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অতি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে, তাতে আবহাওয়ার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের ব্যাপারে এক বা দুই সপ্তাহ আগেই পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উন্নতি করা জরুরি হয়ে উঠেছে। তাতে ভারতে বর্ষার প্রভাবের বিষয়টি আরও দক্ষতার সাথে বা কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যাবে। এই ক্ষেত্রে আরও অর্থ এবং গবেষণার ওপর নজর দেওয়া দরকার।

Top News Today

Sign in to unlock member-only benefits!
  • Access 10 free stories every month
  • Save stories to read later
  • Access to comment on every story
  • Sign-up/manage your newsletter subscriptions with a single click
  • Get notified by email for early access to discounts & offers on our products
Sign in

Comments

Comments have to be in English, and in full sentences. They cannot be abusive or personal. Please abide by our community guidelines for posting your comments.

We have migrated to a new commenting platform. If you are already a registered user of The Hindu and logged in, you may continue to engage with our articles. If you do not have an account please register and login to post comments. Users can access their older comments by logging into their accounts on Vuukle.